ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ , ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​ওসি পরিচয়ে চাঁদাবাজি

ছাত্রদল নেতাকে মারধরের পর পুলিশে দিল জনতা

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১০-০১-২০২৫ ০৬:৩৭:৪১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১০-০১-২০২৫ ০৬:৩৭:৪১ অপরাহ্ন
ছাত্রদল নেতাকে মারধরের পর পুলিশে দিল জনতা ​সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
নিজেকে পুলিশের ওসি পরিচয় দিয়ে বাবা-ছেলেকে জিম্মি করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করার অভিযোগে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক ও তার সহযোগী মো. আপেলকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। 

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮টায় দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪ শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড় নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় চৈতু বর্মন নামের এক ব্যক্তি বৃহস্পতিবার রাতে বাদি হয়ে ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাকসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখিত অন্য আসামিরা হলেন- মো. শাহাদাত হোসেনের ছেলে মো. আপেল, মো. আব্দুস সাত্তারের ছেলে মো. শাহীনুর ইসলাম, মো. আপনের ছেলে মো. শান্ত, মো. আক্তারুল, শ্রী উজ্জ্বল রায়, শ্রী তাপস রায় এবং শ্রী মহেশ চন্দ্র রায়।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদী চৈতু বর্মনের ছেলে ইমন চন্দ্র বর্মণ (২২) একই গ্রামের মিতু রানী রায়ের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং টাঙ্গাইলে অবস্থান করেন।

এই ঘটনার জের ধরে গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) কোতয়ালি থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাকসহ তার সঙ্গীয় লোকজন মাইক্রোবাস নিয়ে রাত পৌনে ১২টায় দিনাজপুর সদরের ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামে শ্রী চৈতু চন্দ্র বর্মণের বাসায় যান। তাকে ডেকে নিয়ে মো. আব্দুর রাজ্জাক নিজেকে কোতোয়ালি থানার ওসি পরিচয় দেন। বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, থানায় যেতে হবে।

এরপর বাদী চৈতু বর্মন তার পরিবারের লোকজনকে ডাকতে চাইলে আব্দুর রাজ্জাকসহ তার লোকজন তাকে জোরপূর্বক আটক করে টানা হেচড়া করে সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলেন। জানতে চান ছেলে ইমন কোথায় আছে। তার ঠিকানা জানার পর বাদীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে টাঙ্গাইলে অপহরণ করে নিয়ে যান।

টাঙ্গাইল থেকে ছেলে ইমনসহ তার বাবা বাদী চৈতুকে নিয়ে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ১০টায় পুনরায় দিনাজপুর নিয়ে এসে ৪নং শেখপুড়া ইউনিয়নের মাধবপুর গোয়ালপাড়া নামক স্থানে নিয়ে গিয়ে শ্রী মহেশ চন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাসায় আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

নিরুপায় হয়ে ছেলে ও নিজের জীবন রক্ষার্থে চৈতু তাদের টাকা দিতে স্বীকার করে এক দিনের সময় চাইলে বিবাদী আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীয় লোকজন টাকা না দিলে বা কাউকে জানাজানি করলে বিভিন্ন মামলাসহ প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ওই রাতে ছেড়ে দেয়।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাত ৮টায় ছাত্রদল নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গীয় মো. আপেল চৈতু ও তার ছেলে এমনকি ভাটিনা ঠাকুরবাড়ি গ্রামের চাকলাদার পুকুর পাড় নামের স্থানে ডেকে নেয় এবং পুনরায় আব্দুর রাজ্জাক মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন।

এসময় এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আব্দুর রাজ্জাক ও আপেল পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের ধরে উত্তমমধ্যম দিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে।

এ ব্যাপারে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মতিউর রহমান বলেন, জাতীয় জরুরি সেবায় কল পেয়ে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে বিক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে আব্দুর রাজ্জাক ও সঙ্গীদের থানায় নিয়ে আসে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলা স্কুপ/প্রতিনিধি/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ